সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে দুই সহোদরের চাঁদাবাজি তথ্য ও সাইবার সন্ত্রাসের কারনে সরকারী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইনশৃংখলা বাহিনী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন।’ অভিযোগ উঠেছে সরকারি বেসরকারি নানা পর্যায় থেকে সাংবাদিক পরিচয়ে ওই দুই সহোদর এলাকায় নাটকীয় নানা অঘটন ঘটিয়ে চাঁদাবাজিসহ জন-হয়রানী অব্যাহত রেখেছে।’ ইন্টারনেটে কুড়ি থেকে ত্রিশটিরও বেশী ভূয়া সাইট খোলে মানুষের মান-সম্মান এমনকি প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে চলেছে। নাটকীয়ভাবে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক নানা অঘটন ঘটিয়ে অন্যের উপর দায় চাপানোর মত ঘৃন্য কাজেও তারা লিপ্ত। শাসকদল পরিচয়ের কিছু সন্ত্রাসীদের হাত করে এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাহাঙ্গীর আলম ভুইয়া ও মোজাম্মেল আলম ভুইয়া সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাটের রব ভুইয়া এবং তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া আলেয়া বেগমের পুত্র ।
অভিযোগে প্রকাশ, জাহাঙ্গীর ও মোজাম্মেল দুইভাই এলাকায় এবং প্রশাসনের বিভিন্নস্থরে আধিপত্য বিস্তারে সাইবার সন্ত্রাসে জড়িত হয়ে পড়েছে। নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ে রকমফের অবৈধ স্বার্থ আদায় করে থাকে। স্বার্থ আদায় করতে ব্যর্থ হলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে তাদের ভূয়া এবং ফেইক আইডিগুলো ব্যবহার করে নানা অপবাদ ও হয়রানীমূলক অপপ্রচার চালিয়ে থাকে। জাহাঙ্গীর ও মোজাম্মেলের ভূয়া ও ফেইক ইন্টারনেট সাইট এবং আইডিগুলো হচ্ছে শারমিন চৌধুরী, দৈনিক বাদাঘাটের সংবাদ, তাদের ভাতিজা জধঐধঃ ঐরফবৎ , তাহিরপুরের সম্রাট, তাহিরপুরের আলো, ক্রাইম ক্রাইম,পাহাড়ি বন্যা, তাহিরপুর বিডিলাইভ রিপোর্ট, দৈনিক তাহিরপুরের ডাক, দৈনিক বাদাঘাটের সংবাদ, টর্নেডো বার্তা, আনোয়ারপুর বার্তা, দৈনিক শ্রীপুর নিউজ-তাহিরপুর, তাহিরপুর নিউজ, বড়ছড়ার কন্ঠ, তাহিরপুরের গরম খবর, তাহিরপুর সীমান্তের সংবাদ, দৈনিক তাহিরপুরের কণ্ঠস্বর, সিমান্তের কন্ঠ, আমাদের স্বপ্নের বাদাঘাট, তাহিরপুর সীমান্তের সংবাদ, তাহিরপুরের খবর, তাহিরপুরের টপ নিউজ, তাহিরপুর এক্সপ্রেস, “শারমিন চৌধুরী” , দৈনিক বাদাঘাটের সংবাদ সহ ২০ থেকে ৩০টি সাইট।’
জানা গেছে, মোজাম্মেল ভূইয়া একটি এসিড সন্ত্রাস মামলার পলাতক আসামী । মামলার পর থেকে সে চরম প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠে। শাসকদলের স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীদের হাত করে নিজের মামলার বাদীকে ফাঁসাতে কালি মুর্তি ভাংচুর করানো , অপ্রচার, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি পড়ানোর মত একের পর এক নানা অপকর্ম ও অঘটনের জন্ম দিয়েই চলেছে।
ভোক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,সম্প্রতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্টাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের বিভিন্নস্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি সম্বলিত পোষ্টার ব্যানার ও প্লেকার্ড টানানো হয়। এ সুযোগে ‘সাইবার সন্ত্রাসী’ মোজাম্মেল ভুইয়া ও তার ভাই জাহাঙ্গীর ভুইয়া একটি ষড়যন্ত্রমূলক নাটক ম ায়ন করে। মোজাম্মেল ও জাহাঙ্গীর গত ৩০ জানুয়ারী রাতে বাদাঘাট বাজারে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও তার পুত্র’র ছবি সম্বলিত ছাত্রলীগের প্রতিষ্টাবার্ষিকীর পোস্টার-ব্যানার তাদেও প্রতিভু লোকজনের দ্বারা নামিয়ে ও ছিড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে শাসকদল পরিচায়ক তাদের সহযোগীদের দিয়ে প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করায়, যা থানার মামলা নং-০৫(২)১৭। মামলায় মোজাম্মেল ভূইয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা এসিড মামলার বাদীসহ ৩জনকে আসামী করা হয়। আসামীরা হচ্ছেন এসিড মামলার বাদী সাংবাদিক হাবিব সরোয়ার আজাদ, সাক্ষী আলম শেখ ও বাদাঘাট সরকারি ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের হতদরিদ্র পরিবারের কলেণজ ছাত্র রাজু মীর। পরে মোজাম্মেল ও জাহ্ঙ্গাাীর তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীদের দিয়ে নিরপরাধ কলেজছাত্র রাজুকে ধরে বেদম মারপিট করে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে দেয় এবং থানায় নিয়েও তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।’
মোজাম্মেল ও জাহাঙ্গীর গত ১০ ফেব্রয়ারী সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিকের কাছে থেকে মাসিক ১০হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ এনে একটি মিথ্যা সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও ফেসবুকে প্রেরন এবং প্রচার করে। পাশাপাশি এ সংবাদে তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর-এর ভূয়া ও মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করে ।
’এ ব্যাপারে মোজাম্মেল আলম ভুইয়ার বক্তব্য জানতে চাইলে সে নিজেকে মাইটিভি’র সাংবাদিক এবং তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম ভুইয়া নিজেকে মানবজমিন’র সাংবাদিক দাবি করে বলে তাদের বিরুদ্ধে আনা ফেইক ও ভূয়া নামের আইডি ব্যবহার, তথ্যসন্ত্রাস এবং নাটক ম ায়নের অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা।
তাহিরপুরের বড়দল উওর ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন, আমি ওই সব ভুয়া আইডির ব্যাপারে থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছিলাম কিন্তু আজ পর্য়্যন্ত এ ব্যাপারে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ’
তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর জানান, জাহাঙ্গীর ১০ ফেব্রƒয়ারী প্রেরিত সংবাদে আমার বক্তব্য বলে যা প্রচার করেছে সেটা আদৌ আমার বক্তব্য নয়।’ এটা সম্পূর্ন সত্যের অপলাপ।
সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল নাসির উদ্দিন আহমেদ পিএসসিস বলেন, অনেক সংবাদে মোজাম্মেল ও জাহাঙ্গীর এই দু সহোদর আমার সাথে কথা না বলেই আমার বক্তব্য বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন দিচ্ছে যা পরবর্তীতে পাঠকরা ফোন করে জানালে আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।’
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ রবিবার রাতে বলেন, সাংবাদিকের কাছ থেকে পুলিশের চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অতি বিস্ময়কর।’ সাংবাদিকসহ সমাজের বিবেকবান মানুষ এর যথার্থতা খুব ভাল বুঝেন ও জানেন। তিনি এ বিষয়ে অনুসন্ধানপূর্বক বস্তনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।